এ বি এন এ : রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরূদের ফজিলত অত্যধিক। দরূদের ফজিলত সম্পর্কিত অনেক তথ্যই আমরা কম-বেশি জানি। ইমাম ফকিহ আবুল লাইছ সমরকান্দি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিশ্বনবির প্রতি দরূদের অসামান্য বরকতের ঘটনা বর্ণনা করেন। যা এখানে তুলে ধরা হলো-
ইমাম ফকিহ আবুল লাইছ সমরকন্দি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি আমার পিতাকে এ ঘটনা বলতে শুনেছি, হজরত সুফিয়ান সওরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এক ব্যক্তিকে দেখলেন যে, সে প্রত্যেক কদমে কদমে বিশ্বনবির প্রতি দরূদ পড়ছেন। তিনি তাঁকে বললেন, আপনি যে তাসবিহ ও তাহলিল ছেড়ে শুধুমাত্র দরূদ পড়ছেন? এর কি কোনো রহস্য আছে?
লোকটি হজরত আবু সুফিয়ান সাওরিকে বললেন, আপনি যদি এ যুগের অখ্যাত ও অপরিচিত লোক হতেন, তাহলে আপনাকে দরূদ পাঠের রহস্যের কথা বলতাম না। তারপর সে তাঁকে বলল, একদিন আমি এবং আমার পিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি তার সেবা করতে লাগলাম।
এক রাতে আমি তার শিয়রে বসে আছি, এমন সময় আমার পিতা ইন্তেকাল করলেন। ইন্তেকালের পর দেখতে পেলাম, তার চেহারা কালো হয়ে গেল। এমনটা দেখে আমি বললাম, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’ তারপর আমি চাদর টেনে তার চেহারা ঢেকে দিলাম। এরপর আমার ঘুম এসে গেল।
স্বপ্নে দেখতে পেলাম- একজন লোক এলো, যার শরীরে কাপড় ছিল খুব পরিচ্ছন্ন এবং গায়ের রং ছিল সুন্দর। এত সুন্দর মানুষ আমি কখনো দেখিনি। লোকটি আমার পিতার নিকট আসলো এবং তার মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে হাত দ্বারা চেহারা মুছে দিল। সঙ্গে সঙ্গে তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে গেল।
এরপর এ সুন্দর লোকটি চলে যেতে লাগলে আমি তাঁর কাপড় আঁকড়ে ধরে বললাম, হে আল্লাহর বান্দা! আপনি কে? যে এ অচেনা অঞ্চলে আমার পিতার প্রতি রহম করলেন?
লোকটি বললেন, তুমি কি আমাকে চেন না? আমি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শোন! তোমার পিতা নিজের ওপর জুলুম করত। তবে আমার প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠ করত কিন্তু কিছুক্ষণ ধরে তার দরুদ আমার কাছে পৌঁছে না। তাই আমি ফেরেশতাকে জিজ্ঞাসা করলাম দরুদ না আসার কারণ কী?
ফেরেশতা বললেন, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই আমি নিজেই (মহানবী) এখানে এসেছি। আমি তাকে সাহায্য করি। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল।
ঘুম থেকে জেগে দেখলাম বাস্তবেই আমার পিতার চেহারা উজ্জ্বল ও ঝলমলে হয়ে গেছে।
এ হলো বিশ্বনবির প্রতি দরূদ পড়ার ফজিলত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর প্রতি বেশি বেশি দরূদ পড়ার এবং তাঁর মতাদর্শে জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।